উকুন দূর করার উপায়
স্কিন ফর্সা করার উপায় উকুন একটি সাধারন সমস্যা।বর্তমান সময়ে সবার মাথাতেই উকুন রয়েছে।উকুন হলো একটি ক্ষুদ্র পরজীবী পোকা যার বসবাস মাথাতেই এবং মাথার ত্বকের রক্ত খেয়েই তারা বেঁচে থাকে। উকুন যদিও কোন বড় রোগ বহন করে না, তবুও এটি অনেক বিরক্তিকর এবং অস্বস্তিকর। তাই আজ এই পোস্টে মাথায় উকুন কেনো হয় ? এবং উকুন দূর করার উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
উকুন দূর করার উপায় : ভূমিকা
স্কুল বয়সী বাচ্চা এবং বাচ্চার পরিবারে উকুনের সমস্যা বেশি দেখা দেয়।অনেকেই বলে যে মাথা নোংরা থাকলে অথবা অপরিষ্কার পরিবেশে থাকলে মাথায় উকুন হয় এই ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল।উকুন হওয়ার নির্দিষ্ট কোন কারণ নেই উকুন যেকোনো মানুষের হতে পারে।উকুন ছোঁয়াচে রোগের মত একজন থেকে আরো চার-পাঁচ জনের মধ্যে ছড়িয়ে যায়। আপনারো যদি উকুনের সমস্যা থেকে থাকে তাহলে পোষ্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন আজ এই পোস্ট থেকে আপনি জানতে পারবেন যে উকুন দূর করার উপায় গুলো কি কি।
মাথায় উকুন কেনো হয় ?
বর্তমান সময় উকুন সবার মাথাতেই আছে।আপনার মনে নিশ্চয়ই প্রশ্ন আসে যে উকুন কেন হয় তাহলে আপনাকে বলি উকুন হওয়ার নির্দিষ্ট কোনো কারণ নেই। উকুন একটি ক্ষুদ্র পোকা।
এটি ছোঁয়াচে রোগের মত একজন থেকে অন্য জনের কাছে স্থানান্তরিত হয়।কোন একটি পরজীবী পোকা যা আপনার মাথাতেই বসবাস করে এবং আপনার মাথার ত্বক থেকে
রক্ত খেয়ে বেঁচে থাকে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় স্কুল বয়সী বাচ্চারা উকুনে আক্রান্ত হয়। অনেকেই ভাবে চুল নোংরা থাকলে অথবা অপরিষ্কার পরিবেশে বসবাস করলে উকুন হয়
কিন্তু এই ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল ও কোন হওয়া নির্দিষ্ট কোন কারণ নেই। এটি ছোঁয়াচে রোগের মত উকুনে আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ রয়েছে এমন জিনিসপত্র ব্যবহার করলে উকুন স্থানান্তরিত হয়।
এইজন্য উকুনে আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ রয়েছে এমন জিনিসপত্র গুলো ঠিকভাবে পরিষ্কার করতে হবে।যেমন চিরুনি,কাপড়চোপড়, বিছানার চাদর ,বালিশের কভার, মাথার হেলমেট এগুলো ভালো হবে পরিষ্কার করতে হবে।
উকুন দূর করার উপায়
মাথার উকুন যদিও কোন রোগ বহন করে না তবুও এটি অনেক বিরক্তিকর এবং অস্বস্তিকর। তাই আজ আমরা উকুন দূর করার এমন কিছু যাদুকারি উপায় নিয়ে এসেছি যেগুলো অনুসরণ করলে খুব দ্রুত আপনি উকুন থেকে রেহাই পাবেন। সেই উপায় গুলো জানতে নিচে দেখুন:
*ভেজা চুল আঁচড়াতে হবে
চুলে শ্যাম্পু দিয়ে চুল পরিষ্কার করার পর চুলে প্রচুর পরিমাণে কন্ডিশনাল লাগান তারপর চুল সোজা এবং জটমুক্ত করুন। তারপর সরু দাত যুক্ত চিরুনি দিয়ে মাথা আঁচড়াতে হবে।
খেয়াল রাখবেন চিরুনির দাঁত চুলের গোড়া পর্যন্ত যাচ্ছে কি। এভাবে ভেজা চুল চিরুনি দিয়ে আজ রাতে থাকুন মাথার প্রত্যেকটি অংশ দুই থেকে তিন বার করে আচরাতে হবে।এভাবে নিয়মিত গোসল করার পর চুল আঁচড়ালে উকুন অনেকাংশে কমে যাবে।
টি ট্রি অয়েল লাগাতে হবে
কখন দূর করার জন্য কার্যকরী উপায় গুলোর মধ্যে একটি হল টিটরি লাগানো। এই তেলের রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি ফাংগাল এবং অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল উপাদান যা উকুন
এবং ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কঠোরভাবে লড়াই করে উকুনকে দূর করে। এই তেলটি উকুন দূর করার পাশাপাশি চুলে থাকা উকুনের ডিম গুলো কেউ দূর করে।ভালো ফলাফল পেতে
আরো জানুন : দ্রুত ধনী হওয়ার সহজ উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত
প্রতি সপ্তায় দুই থেকে তিনবার এই তেলটি মাথায় ব্যবহার করবেন।২-৩ ফোঁটা তেল আঙ্গুলের সাহায্যে মাথার ত্বকে হালকা করে ম্যাসাজ করবেন যেনো তেল গুলো চুলের ভিতরে প্রবেশ করতে পারে।
তেল দিয়ে চুলটিকে শক্তভাবে বেঁধে রাখবেন।২-৩ ঘন্টা পর হালকা গরম পানি দিয়ে চুলটি ধুয়ে ফেলবেন।তারপর ভেজা চুল সরু দাঁতযুক্ত চিরনি দিয়ে আঁচড়াবেন।
এতে মাথায় থাকা উকুন গুলো পানিতে চুপসে থাকবে এবং পালাতে পারবে না তখন আঁচড়ালে তারা সহজেই তারা নিচে ঝরে পড়বে।
ভিনেগার এবং লবণ
ভিনেগার এবং লবণ অর্থাৎ অ্যাসিটিক অ্যাসিড এবং সোডিয়াম ক্লোরাইড এর সংমিশ্রণ মাথার উকুন এর জন্য বিষের মতো।ভিনেগার এ বিদ্যমান অ্যাসিটিক অ্যাসিড উকুন দূর করে
তার সাথে যদি লবণ মেশানো যায় তাহলে আরো দ্রুত উকুন এবং উকুনের ডিম গুলো দূর হয়। এইজন্য ভিনেগার এবং তার মধ্যে হালকা একটু লবণ মিশিয়ে সেটি আঙ্গুলের সাহায্যে
আরো জানুন : মাথায় উকুন কেন হয় - উকুন দূর করার উপায়
মাথার স্ক্যাল্পে ভালোভাবে ম্যাসাজ করবেন এতে উকুন খুব দ্রুত দূর হবে। ভালো ফলাফল পেতে সপ্তাহে তিন থেকে চারবার ভিনেগার এবং লবণ লাগাবেন এতে খুব দ্রুত আপনি উকুন থেকে রেহাই পাবেন।
জেনে নিন কিভাবে ব্যাবহার করতে হয়;
১/৪ কাপ ভিনেগারের সাথে ১/৪ কাপ লবণ মিশিয়ে একটি স্প্রে বোতলে সংরক্ষণ করতে হবে।তারপর স্প্রে বাটোলের সাহায্যে মাথার স্ক্যাল্পে ভিনেগার এবং লবণ পানিটি হালকা স্প্রে করতে হবে।
তারপর আঙ্গুলের সাহায্যে মাথায় ভালোভাবে ম্যাসাজ করতে হবে। তারপর ৩-৪ ঘন্টা পর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
নিম পাতা
নিম পাতাতে রয়েছে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিসেপটিক উপাদান যা উকুন দূর করতে সাহায্য করে এছাড়াও নিমে রয়েছে আজাদিরেছটিন (Azadirechtin) এবং কীটনাশক
যা চুল থেকে থেকে উকুন দূর করার পাশাপাশি উকুনের ডিম গুলোকেও দূর করতে সাহায্য করে। উকুন দূর করার ঘরোয়া কার্যকরী উপায় গুলোর মধ্যে একটি হল নিম পাতা।
আরো জানুন : দ্রুত মোটা হবো কিভাবে - ১মাসে মোটা হওয়ার উপায়
নিমপাতা একটি প্রাকৃতিক ভেষজ উপাদান। আপনার মাথায় যদি অতিরিক্ত ওপেন থাকে তাহলে আপনি খুব সহজে নিম পাতার মাধ্যমে উকুন দূর করতে পারবেন।
জানেন নিন কিভাবে ব্যাবহার করতে হয়;
এক কাপ নিম পাতা সিদ্ধ করে রস বের করে নিতে হবে।তারপর আধা কাপ নিম পাতা পাটায় বেটে সেই নিম পাতার সাথে রস মিশিয়ে মাথায় এবং চুলে লাগাতে হবে।২ ঘন্টা পর হালকা গরম পানি দিয়ে মাথা ধুয়ে ফেলতে হবে।
পেঁয়াজের রস
পেঁয়াজের রস চুল লম্বা ও সুন্দর করার পাশাপাশি চুল থেকে উকুন দুর করতে সাহায্য করে।পেঁয়াজের রয়েছে অ্যান্টিফাঙ্গাল এবং এন্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান।এই উপাদানগুলো
মাথার উকুন দূর করতে সাহায্য করে।উকুন দুর করার পাশাপাশি পেঁয়াজ চুলকে ঘনো এবং লম্বা করে তোলে।সপ্তাহে ৩ থেকে ৪ বার পেয়াজ দিবেন তাহলে আপনার চুল খুব দ্রুত লম্বা এবং ঘন হয়ে উঠবে।
চুলের জন্য পেঁয়াজের চেয়ে বেশি উপকারী আর কিছুই নেই।চুলের যেকোনো সমস্যার সমাধান হলো পেঁয়াজ।চলুন এবার জেনে আসি পেঁয়াজের রস কিভাবে ব্যবহার করতে হবে;
২-৩ টা পেঁয়াজ পাটায় বেটে রস বের করে নিতে হবে।তারপর সেই রস মাথার স্কেল্পে ভালোভাবে ম্যাসাজ করতে হবে।২-৩ ঘন্টা পর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
ভালো ফলাফল পেতে চাইলে এভাবে সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন পেঁয়াজের রস ব্যাবহার করবেন।এতে আপনার চুল যেমন লম্বা এবং ঘন হবে তেমনি মাথা থেকে উকুনও দূর হবে।
আপনি যদি উপর একটি টিপস গুলো অনুসরণ করেন তাহলে খুব দ্রুত উখন থেকে রেহাই পেতে পারবেন। আজকাল প্রায় সবার মাথা দিয়ে উকুন রয়েছে।এটি কোন বড় সমস্যা না হলেও বিষয়টি খুব বিরক্তিকর লাগে।
উকুন দূর করার উপায় : শেষ কথা
আজকের এই পোষ্টে উকুন দূর করার উপায় এবং মাথায় উকুন কেনো হয়এই সমস্ত বিষয় নিয়ে খুঁটিনাটি আলোচনা করলাম। আশা করি আজকের এই পোস্টটি আপনার ভালো লেগেছে ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই একটি কমেন্ট করে জানাবেন আর হ্যাঁ এমন পোস্ট আরো পেতে নিয়মিত এই ওয়েবসাইটটি ভিজিট করবেন ধন্যবাদ।
ডিজিটাল লাইফ স্টাইলের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url