মাসিক অবস্থায় রোজা রাখা যাবে কিনা - রমজান মাসের ফজিলত

অনেকের মনে প্রশ্ন থাকে মাসিক অবস্থায় রোজা রাখা যাবে কিনা? তাই আজকের এই পোস্টে আমরা মাসিক অবস্থায় রোজা রাখা যাবে কিনা , নফল রোজা অবস্থায় মাসিক হলে করণীয়, পিরিয়ডের কত দিন পর রোজা রাখা যাবে এবং কি করলে মাসিক দ্রুত বন্ধ হবে এবং রোজা রাখা যাবে সেই বিষয়ে আজকের এই পোস্টে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব। এছাড়াও আজকের এই পোস্টে আমরা অনিয়মিত মাসিক হলে রোজা হবে কি সেই বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।রমজান মাসের ফজিলত।
মাসিক অবস্থায় রোজা রাখা যাবে কিনা - রমজান মাসের ফজিলত
আমাদের মেয়েদের জীবনে এই সমস্যাগুলো লেগেই থাকে। যেমন অনেক সময় দেখা যায় রমজান মাসে মাসিক হয়। এই সময় আমরা  রোজা রাখতে পারি না এই অবস্থায় আমাদের কি করা উচিত? এই বিষয়ে হাদিস কি বলে? মাসিক অবস্থায় রোজা রাখা যাবে কিনা জানতে এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন। আমরা আজকের এই পোস্টে মাসিক অবস্থায় মহিলাদের নামাজ রোজার বিধান কি, পিরিয়ডের কত দিন পর রোজা রাখা যাবে, অনিয়মিত মাসিক হলে রোজা হবে কি এবং রমজান মাসের ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।

মাসিক অবস্থায় রোজা রাখা যাবে কিনা 

জানতে চান মাসিক অবস্থায় রোজা রাখা যাবে কিনা ? আমরা প্রত্যেকে জানি যে মাসুক অবস্থায় অথবা পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে নামাজ পড়া যায় না সাথেই রোজাও রাখা যায় না তবে এই বিষয়টুকু কতটুকু যৌক্তিক? এই পোস্টে আমরা মাসিক অবস্থায় রোজা রাখা যাবে কিনা সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব এবং এই বিষয়গুলো কতটুকু যৌক্তিক অথবা বিশ্বস্ত সেই বিষয়েও আলোচনা করব। চলুন জেনে আসি মাসিক অবস্থায় রোজা রাখা যাবে কিনা।

মাসিক অথবা ঋতুস্রাব চলাকালীন সময়ে নারীদের রোজা অথবা নামাজের কোন প্রয়োজন নেই এই সময়টুকু তাদের শুধু বিশ্রামের প্রয়োজন কারণ মাসিক চলাকালীন সময়ে নারীদের শরীর অনেক বেশি দুর্বল থাকে সাথেই পেটে তীব্র ব্যথা অনুভূত হয় অনেক সময় বমি বমি ভাব দেখা দেয়। মাসিক চলাকালীন এটি খুব কষ্টকর হয়। মাসিক এটি সম্পূর্ণ একটি শরীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া। যা প্রত্যেক নারীদের ১১ থেকে ১৬ বছরের মধ্যে শরীরে দেখা দেয়। এটি নারীদেরকে সন্তান ধারণের সক্ষম করে তোলে।

প্রজননের উদ্দেশ্যে নারীর ডিম্বাশয় থেকে ডিম্ব স্ফুটন হয় এবং সেটি ফ্যালিপিয়ন টিউবের সাহায্যে গর্ভাশয়ে আসে এবং এটি তিন থেকে চার দিন পর্যন্ত স্থায়ী হয় অনেক সময় মাসিক ১০ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে তবে এর চেয়ে বেশি থাকলে অবশ্যই আপনাকে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। নারীদের প্রতি 28 দিন পর পর ঋতুস্রাব হয়। ঋতুস্রাবকে মাসিক বলা হয় যেহেতু এটি প্রতিমাসে হয় এর জন্য একে মাসিক বলেও চেনা হয়। তবে আমাদের ইসলাম ধর্মে মাসিক চলাকালীন সময়ে রোজা থেকে বিরত থাকতে বলেছে।

অর্থাৎ এই সময়ে রোজা অথবা নামাজ পড়ার কোন দরকার নেই এই সময় নারীদের প্রয়োজন বিশ্রাম করার। তাই আপনারা ভুল করেও পিরিয়ড চলাকালীন সময় কখনো রোজা রাখার চেষ্টা করবেন না। এমনকি রক্ত আসার শেষ দিন পর্যন্ত মাসিক গণ্য করে রোজা অথবা নামাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। মাসিক সম্পূর্ণভাবে  বন্ধ হয়ে গেলে গোসল করে পাক পবিত্র হয়ে তারপর আপনি রোজার জন্য নিয়ত করে ভোরে সেহরি খেতে পারবেন। আবে মাসিক চলাকালীন সময়ে কখনোই রোজা অথবা নামাজ পড়বেন না।

প্রিয় পাঠক আশা করছি ওপরের আলোচনার মাধ্যমে আপনি বুঝতে পেরেছেন মাসিক অবস্থায় রোজা রাখা যাবে কিনা। নারীদের অনেকের মনে এই প্রশ্নগুলো থাকে আশা করছি আপনি আপনার প্রশ্নের সঠিক উত্তর পেয়ে গেছেন। তবে হ্যাঁ যেহেতু রমজান মাসে প্রতি বছরে একবার আসে এবং এই সময় আমাদের সব বেশি বেশি সব আদায় করতে হবে সে ক্ষেত্রে আপনি চাইলে সবসময় তসবি তেলাওয়াত করতে পারেন মনে মনে সূরা পাঠ করতে পারেন। মাসিক চলাকালীন সময়ের তজবি তিলাওয়াত কিংবা সূরা পাঠ করা যাবে না। এমন কোন হাদিস নেই এইজন্য আপনি নিঃসন্দেহে মাসিক চলাকালীন সময়ে তসবি তেলাওয়াত এবং সূরা পাঠ করতে পারবেন। এবার  চলুন আমরা জেনে আসি মাসিক অবস্থায় রোজা রাখলে কি হবে?

মাসিক অবস্থায় রোজা রাখলে কি হবে

মাসিক নিয়ে চিন্তিত? প্রতি বছরে একবার আসে এই রমজান মাসটি পবিত্র মাহে রমজান। হাজারো ফজিলত পূর্ণ বরকত ও কল্যাণে ভরপুর এই মাসটি আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রমজান মাসে আমাদেরকে বেশি বেশি আমল করতে হবে বেশি বেশি কুরআন পড়তে হবে নামাজ পড়তে হবে রোজা রাখতে হবে। রমজান মাসে আমাদের প্রত্যেকের উপর রোজা রাখা ফরজ। সারাদিন রোজা রাখার পর সকলে মিলে একসাথে ইফতারি করার আনন্দটাই আলাদা। রমজান মাসটা সত্যিই এক শান্তির মাস।

তবে অনেক সময় দেখা যায় আমাদের মেয়েদের রমজান মাস চলাকালীন সময়ে পিরিওড অথবা মাসিক দেখা দেয়। এই সময় আমাদের কি করা উচিত? অর্থাৎ মাসিক অবস্থায় রোজা রাখা যাবে কিনা আজকের এই পোস্টে আমরা সেই বিষয়ে আলোচনা করব। পিরিয়ড চলাকালীন এই সময়টি আমাদের মেয়েদের জন্য খুবই কষ্টকর হয়ে ওঠে। পেটে তীব্র ব্যথা অনুভূত হয় সাথেই ক্লান্তিবোধ এবং শরীর দুর্বল হয়ে ওঠে। যার কারণে আল্লাহ তায়ালা এই পিরিয়ড চলাকালীন সময়টি আমাদেরকে রোজা ও নামাজ থেকে দায়মুক্তি দিয়েছে।

পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে শরীর অনেক দুর্বল থাকে এই সময় আল্লাহ তায়ালা নামাজ পড়তে মানা করেছেন কারণ নামাজের সময় সিজদাতে নিচু হতে নারীদের কষ্ট হবে তার কারণে তিনি এই সময়টুকু নামাজ পড়তে মানা করেছেন। সাথেই পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে আমাদের পেটে তীব্র ব্যথা হয় এবং সব সময় একটি ক্লান্তিবোধ কাজ করে এই সময় রোজা রাখলে শরীর আরো বেশি দুর্বল হয়ে যাবে এই জন্য এই সবাই আল্লাহ তা'আলা আমাদেরকে রোজা রাখতেও মানা করেছেন।

প্রিয় পাঠক আশা করছি ওপরের এত আলোচনার মাধ্যমে আপনি বুঝতে পেরেছেন মাসিক অবস্থায় রোজা রাখলে কি হয়। যেহেতু কুরআন ও হাদিসের মাসিক চলাকালীন অবস্থায় রোজা রাখতে মানা করা হয়েছে তাই আপনি যদি এই অবস্থায় রোজা রাখেন তাহলে অবশ্যই হাদিস ও কুরআনের কথা কে অমান্য করা হচ্ছে এবং এতে আপনার পাপ হবে এই জন্য মাসিক চলাকালীন অবস্থায় কখনোই রোজা রাখবেন না এই সময় বেশি বেশি তসবি তেলাওয়াত এবং সূরা পাঠ করবেন। এবার চলুন আমরা জেনে আসি পিরিয়ডের কত দিন পর রোজা রাখা যাবে।

পিরিয়ডের কত দিন পর রোজা রাখা যাবে 

পিরিয়ডের কত দিন পর রোজা রাখা যাবে? যেহেতু নারীদের প্রতি মাসে ঋতুস্রাব হয় সেক্ষেত্রে পবিত্র রমজান মাসে পিরিয়ড হলে এক্ষেত্রে রোজা রাখা যাবে কিনা সেই বিষয়ে আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন ওপরে আমরা এতক্ষন আলোচনা করলাম মাসিক অবস্থায় রোজা রাখা যাবে কিনা। ইতিমধ্যেই আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন যে মাসিক চলাকালীন অবস্থায় কখনোই রোজা রাখা যাবে না যেহেতু আমাদের ইসলাম ও হাদিসে মাসিক চলাকালীন অবস্থায় রোজা রাখতে মানা করা হয়েছে।

সে ক্ষেত্রে আপনি যদি এই অবস্থায় রোজা রাখেন তাহলে অবশ্যই আপনার পাপ হবে এই জন্য কখনোই পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে রোজা রাখা যাবে না এমনকি নামাজও চলাকালীন সময়ে নামাজও পড়া যাবে না। তাহলে পিরিয়ডের কত দিন পর রোজা রাখা যাবে? পিরিয়ড এটি সম্পূর্ণ একটি শরীর ভিত্তিক প্রক্রিয়া। এটি নারীদের সন্তান ধরনের ক্ষমতাকে সক্ষম করে। অনেকের মনে এই প্রশ্নটি থাকে যে পিরিয়ডের কত দিন পর রোজা রাখা যাবে? চলুন জেনে আসি পিরিয়ড কত দিন পর রোজা রাখা যাবে

পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে কখনো রোজা রাখা যাবে না এমনকি রক্ত আসার শেষ দিন পর্যন্ত সেটিকে পিরিয়ডের হিসেবে গণ্য করে সেই দিনেও আপনি নামাজ অথবা রোজা রাখতে পারবেন না। ৪ দিন অথবা ৫ দিন যখন সম্পূর্ণভাবে পিরিয়ড বন্ধ হয়ে যাবে  বা রক্ত আসা বন্ধ হয়ে যাবে তখন গোসল করে পাক-পবিত্র হয়ে আপনি রোজার জন্য নিয়ত করতে পারবেন। তবে হ্যাঁ মনে রাখবেন পিরিয়ড অন্যভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর আপনাকে অবশ্যই পাক-পবিত্র হতে হবে অর্থাৎ গোসল করতে হবে।

তারপর আপনি রোজা রাখতে পারবেন নামাজ কায়েম করতে পারবেন কুরআন শরীফ পাঠ করতে পারবেন। প্রিয় পাঠক আশা করছি উপরের এত আলোচনার মাধ্যমে আপনি বুঝতে পেরেছেন পিরিয়ডের কত দিন পর রোজা রাখা যাবে। পিরিয়ড সম্পূর্ণরূপে ভালো হয়ে যাওয়ার পর সম্পূর্ণ পাক-পবিত্র হয়ে তারপর আপনি রোজা রাখতে পারবেন। আশা করছি এ বিষয়ে আপনি বুঝতে পেরেছেন এবার চলুন আমরা জেনে আসি অনিয়মিত মাসিক হলে রোজা হবে কি

অনিয়মিত মাসিক হলে রোজা হবে কি

অনিয়মিত মাসিক হলে রোজা হবে কি? ইসলাম শরীয়তের বিধান অনুযায়ী জানা যায় যে মাসিক অথবা পিরিয়ড চলাকালীন সমূহের নামাজ অথবা রোজা পালন করা যাবে না অবশ্যই এই সময় গুলোতে বেশি বেশি বিশ্রাম নিতে হবে। উপরের এত আলোচনার মাধ্যমে আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন যে পিরিয়ড সম্পূর্ণরূপে ভালো হয়ে যাবার পর সম্পূর্ণ পাক-পবিত্র হয়ে রোজা রাখতে পারবেন তবে এর আগে আপনি চাইলে কিন্তু ফিরে চলাকালীন সময়ে রোজা রাখতে পারবেন না।

যেহেতু আমাদের ইসলাম এবং হাদিসে করা হয়েছে তাই আপনি যদি এরপরেও মাসিক চলাকালীন সময়ে রোজা রাখেন এবং নামাজ কায়েম করেন তাহলে অবশ্যই ইসলামের বিধি বিধানকে ভঙ্গ করা হবে এবং এতে আপনার পাপ হবে। এইজন্য কখনোই মাসিক অথবা পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে রোজা রাখবেন না। তবে যদি অনিয়মিত মাসিক হয় অর্থাৎ অনিয়মিত মাসিক বলতে বোঝায় যাদের প্রতি মাসে দুই থেকে তিনবার মাসিক হয় আবার তিন থেকে চার মাস পর পর মাসি হয় একেই মূলত অনিয়মিত বলে।

এক্ষেত্রে অনিয়মিত মাসিক হলে রোজা হবে কি? "না" আশিক নিয়মিত হোক আর অনিয়মিত মাসিক চলাকালীন সময় কখনই রোজা অথবা নামাজ আদায় করা যাবে না। ইসলামের শরীয়তের বিধি-বিধান অনুযায়ী অনিয়মিত মাসিক চলা অবস্থায় কখনোই রোজা রাখা যাবে না এক্ষেত্রে আপনি তসবি তেলাওয়াত করতে পারেন অথবা সূরা পাঠ করতে পারেন। যেহেতু রমজান মাসে আমাদের প্রত্যেক মুসলিম ভাই বোনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং আমাদের প্রত্যেকের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে।

তাই এই সময়টি পিরিয়ডের জন্য রোজা রাখতে না পারলেও আপনি তসবি তেলাওয়াত করতে পারবেন এবং সূরা পাঠ করতে পারবেন আপনি চাইলে এভাবেও সোয়াব আদায় করতে পারবেন। রমজান মাসটি খুবই ফজিলতপূর্ণ ও বরকতপূর্ণ মাস। তাই আমাদেরকে রমজান মাসে বেশি বেশি সওয়াব আদায় করতে হবে। এইজন্য বেশি বেশি দোয়া পড়ুন এবং তসবি তেলাওয়াত করুন। এবার চলুন আমরা জেনে আসি নফল রোজা অবস্থায় মাসিক হলে করণীয় কি?

নফল রোজা অবস্থায় মাসিক হলে করণীয়

নফল রোজা অবস্থায় মাসিক হলে করণীয়? অনেকের মনে এই প্রশ্নটি থাকে যে নফল রোজা অবস্থায় মাসিক হলে করণীয় কি? উপরের এত আলোচনার মাধ্যমে ইতিমধ্যেই আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন যে মাসিক চলাকালীন সময়ে রোজা রকাহা যাবে না নামাজও কায়েম করা যাবে না এই জন্য আপনার যদি নফল রোজা অবস্থায় মাসিক হয় এক্ষেত্রে আমি আপনাকে সাজেস্ট করব এই অবস্থায় রোজা ভাঙবেন না আল্লাহ তাআলার কাছে দোয়া পাঠ করবেন।

এবং সব সময় পাক পরিষ্কার থাকবেন। আল্লাহ তাআলার কাছে দোয়া পাঠ করে আপনি আপনার মত রোজা রাখবেন। তবে তারপর থেকে মাসিক সম্পূর্ণভাবে ভালো না হওয়া পর্যন্ত কখনোই রোজা রাখবেন না মাসিক সম্পূর্ণরূপে ভালো হয়ে গেলে তারপর পাক-পবিত্র হয়ে রোজা রাখতে পারবেন। যেহেতু আমাদের ইসলামের বিধি-বিধানে দেওয়া রয়েছে মাসিক চলাকালীন সময়ে কখনোই রোজা রাখা যাবে না এবং নামাজ কায়েম করা যাবে না এ অবস্থায় আপনি যদি রোজা রাখেন এবং নামাজ আদায় করেন সে ক্ষেত্রে ইসলামের বিধি বিধানকে ভঙ্গ করা হবে।

এতে আপনার পাপ হবে। এই জন্য মাসিক অথবা ঋতুস্রাব চলাকালীন সময়ে কখনোই রোজা রাখবেন না চেষ্টা করবেন বেশি বেশি তসবি তেলাওয়াত করার এবং সূরা পাঠ করার। প্রিয় পাঠক আশা করছি আপনি উপরের এত আলোচনার মাধ্যমে বুঝতে পেরেছেন নফল রোজা অবস্থায় মাসিক হলে করণীয় কি। এবার চলুন মাসিক অবস্থায় মহিলাদের নামাজ রোজার বিধান কি ? সেই সম্পর্কে খুঁটিনাটি সবকিছু বিস্তারিত জেনে আসি।

মাসিক অবস্থায় মহিলাদের নামাজ রোজার বিধান কি

উপরের এত আলোচনার মাধ্যমে আপনি এতক্ষণে নিশ্চয় বুঝতে পেরেছেন যে মাসিক অবস্থায় মহিলাদের জন্য নামাজ এবং রোজা দুটোই নিষিদ্ধ। যেহেতু রমজান মাসে আমাদের প্রত্যেক মুসলিম ভাই বোনদের ওপর রোজা ফরজ তবে যখন মহিলাদের মাসিক চলবে কিংবা পিরিয়ড চলবে এই সময় কখনই রোজা রাখা যাবে না এই সময় বেশি বেশি বিশ্রাম নিতে হবে কারণ পিরিয়ড চলাকালীন এই সময়টি মহিলাদের জন্য খুবই কষ্টকর হয় পেটে তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়।

সাথে মাথা ব্যথা বমি বমি ভাব এবং শরীর প্রচুর দুর্বল হয়। এই সময়টি সত্যিই খুবই কষ্টকর হয়। এইজন্য আমাদের ইসলামের শরীয়তের বিধি-বিধানে চলাকালীন সময়ে রোজা এবং নামাজ দুটোই নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আপনি নিশ্চয়ই জানেন আগামী ১১ মার্চ থেকে পবিত্র মাহে রমজান শুরু হবে। প্রতি বছরে একটি মাস পবিত্র রমজান মাস এই সময়টি আমাদের প্রত্যেক মুসলিম ভাই বোনদের জন্য খুবই আনন্দদায়ক এবং একটি ফজিলত পূর্ণ মাস। রমজান মাসে আল্লাহ তায়ালার কাছে আপনি সঠিক উদ্দেশ্যে যা চাইবেন আল্লাহ তাআলা আপনাকে তাই দিবেন।

এই জন্য আমাদেরকে এই সময়টি বেশি বেশি সূরা পাঠ করতে হবে, কুরআন তেলাওয়াত করতে হবে, রোজা রাখতে হবে নামাজ পড়তে হবে। কিন্তু মাসিক অবস্থায় রোজা রাখা যাবে কি? অবশ্যই না মাসিক অবস্থায় কখনো রোজা রাখা যাবে না মাসিক এটি সম্পূর্ণ একটি শরীর বৃত্তিক প্রক্রিয়া। নারীদের প্রতি মাসেই ঋতুস্রাব হয়, ঋতুস্রাব যেহেতু প্রতি মাসে হয় যার কারণে একে মাসিক বলে চিনা না হয়। তবে ইসলামে বিধি-বিধানে রয়েছে মাসিক চলাকালীন সময়ে কখনোই রোজা রাখা যাবে না।

এই জন্য আপনারা চেষ্টা করবেন মাসিক চলাকালীন সময়ে বেশি বেশি সূরা পাঠ করার এবং তসবি তেলাওয়াত করার। আশা করছি উপরের এত আলোচনার মাধ্যমে আপনি বুঝতে পেরেছেন। মাসিক অবস্থায় মহিলাদের নামাজ রোজার বিধান কি।এবার চলুন আমরা জেনে আসি রমজান মাসের ফজিলত সম্পর্কে।

রমজান মাসের ফজিলত

এটি সম্পূর্ণ একটি ফজিলতপূর্ণ এবং বরকতময় মাস। এই মাসটি আমাদের প্রত্যেক মুসলিম ভাই-বোনদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং আমাদের প্রত্যেকের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে এই জন্য আমাদের প্রত্যেকের রমজান মাসে রোজা রাখতে হবে এবং নামাজ পড়তে হবে আর বেশি বেশি তেলাওয়াত এবং সূরা পাঠ করতে হবে। রমজান মাসের গুরুত্ব এক দুই লাইনে বলে শেষ করা সম্ভব নয়। বছরে ১ বার আসে এই মাসটি সারাদিন রোজা রাখার পর সবাই একসাথে মিলে সেহরি খাওয়ার আনন্দটা সত্যিই আলাদা।

রমজান মাস মূলত পূর্বের সমস্ত পাপকে মুছে নতুন জীবন শুরু করার মাস। এই মাসটি আমাদের প্রত্যেক মুসলিম ভাই বোনদের জন্য খুবই ফজিলত পূর্ণ মাস। আপনি রমজান মাসে সঠিক উদ্দেশ্যে আল্লাহ তায়ালার কাছে যা চাইবেন আল্লাহ তা'আলা আপনাকে তাই দিবেন এই জন্য এই মাসে বেশি বেশি সূরা পাঠ করবেন তারাবির নামাজ পড়বেন, তেলাওয়াত করবেন তুলসী তেলাওয়াত করবেন কালিমা পাঠ করবেন সুরা পাঠ করবেন নামাজ পড়বেন রোজা রাখবেন, গরীব দুঃখীদের মধ্যে দান করবেন।

আমাদের প্রিয় রমজান মাসটি অবশ্যই অন্যান্য মাসে তুলনায় অধিক গুরুত্বপূর্ণ এবং ফজিলতপূর্ণ একটি মাস এই জন্য চেষ্টা করবেন রমজান মাসের সম্পূর্ণ নেকি ও সোয়াব আদায় করার। প্রিয় পাঠক আশা করছি ওপরের এত আলোচনার মাধ্যমে আপনি বুঝতে পেরেছেন রমজান মাসের ফযীলত সম্পর্কে। আমরা আজকের এই পোস্টে রমজান মাসের ফজিলত এবং মাসিক অবস্থায় রোজা রাখা যাবে কিনা সাথেই অনিমিত মাসিক হলে রোজা হবে কি এবং পিরিয়ডের কত দিন পর রোজা রাখা যাবে সেই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করলাম।

পাঠকদের কিছু প্রশ্ন 


মাসিক অবস্থায় রোজা রাখা যাবে কিনা?
মাসিক অবস্থায় কখনো রোজা রাখা যাবে না যেহেতু ইসলামের বিধি-বিধানের মাসিক অবস্থায় নামাজ পূজা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে সেই জন্য মাসিক চলাকালীন অবস্থায় কখনোই রোজা রাখবেন না চেষ্টা করবেন বেশি বেশি তসবি তেলাওয়াত করার এবং সূরা পাঠ করার।

রমজান মাসের ফজিলত কি?
আপনি কি রমজান মাসের ফজিলত সম্পর্কে জানতে চান তাহলে এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন আমরা আজকের এই পোস্টে রমজান মাসের ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।

মাসিক অবস্থায় মহিলাদের নামাজ রোজার বিধান কি?
মাসিক অবস্থায় মহিলাদের নামাজ রোজার বিধি-বিধান হলো মাসিক অবস্থায় কখনোই মাজ ও রোজা রাখা যাবে না। এমনকি মাসিকের শেষ দিন পর্যন্ত রোজা ও নামাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। তারপর সম্পূর্ণরূপে মাসিক ভালো হয়ে যাওয়ার পর পাক পবিত্র হয়ে রোজার নিয়ত করতে হবে।

নফল রোজা অবস্থায় মাসিক হলে করণীয় কি?
নফল রোজা অবস্থায় মাসিক হলে, রোজা হবে না তবে আপনি চাইলে এই অবস্থায় রোজা না ভেঙে আল্লাহর কাছে দোয়া পাঠ করে রোজা রাখতে পারেন। তবে তারপর থেকে মাসিক সম্পূর্ণরূপে ভালো না হওয়া পর্যন্ত রোজা রাখতে পারবেন না।তবে হাদিসে রয়েছে মাসিক চলাকালীন সময়ে কখনোই রোজা অথবা নামাজ কায়েম করা যাবে না।

অনিয়মিত মাসিক হলে রোজা হবে কি?
অনিমিত মাসিক হলে কখনোই রোজা রাখা যাবে না মাসিক সম্পূর্ণরূপে ভালো হওয়ার পর পাক পবিত্র হয়ে আপনি রোজার নিয়ত করতে পারবেন।

পিরিয়ডের কত দিন পর রোজা রাখা যাবে ?
পিরিয়ড সম্পূর্ণরূপে ভালো না হওয়া পর্যন্ত রোজা রাখা যাবে না পিরিয়ড যখন সম্পূর্ণরূপে ভালো হয়ে যাবে তখন কোন পাপ পবিত্র হয়ে রোজা রাখতে পারবেন তবে হ্যাঁ রক্ত আসার শেষ দিন পর্যন্তও তাকে পিরিয়ডের দিন হিসেবে গণ্য করা হবে।

লেখকের শেষ কথা

পাঠক আমরা আজকের এই পোস্টে মাসিক অবস্থায় রোজা রাখা যাবে কিনা? রমজান মাসের ফজিলত, মাসিক অবস্থায় মহিলাদের নামাজ রোজার বিধান কি, পিরিয়ডের কতদিন পর রোজা রাখা যাবে এবং অনিয়মিত মাসিক হলে রোজা হবে কি সেই সমস্ত বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করলাম। মাসিক এটি সম্পূর্ণ একটি শরীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া। নারীদের প্রজননের জন্য যখন ডিম্বাশয় থেকে ডিম্ব স্ফুটন হয়ে ফ্যালিপিওন নালির সাহায্যে গর্ভাশয় আসে তখন এটি তিন থেকে চার দিন পর্যন্ত স্থায়ী হয়।

অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় দশ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে এই সময়টুকু নামাজ ও রোজা থেকে দূরে থাকতে হবে কারণ ইসলামের বিধি-বিধানের দেওয়া রয়েছে পিরিয়ড চলাকালীন সময় কখনই নামাজ অথবা রোজা রাখা যাবে না। শুধুমাত্র বিশ্রাম করতে হবে কারণ সময়ে নারীদের শরীর অনেক দুর্বল থাকে এবং সব সময় পেটে তীব্র একটি ব্যথা অনুভূত হয়। পিরিওড এর সময়টি খুবই কষ্টকর। এজন্য মহান আল্লাহ তায়ালা এই সময়টি আমাদেরকে নামাজ ও রোজা থেকে দায়মুক্তি করেছেন।

এক্ষেত্রে অনেকের মনে প্রশ্ন থাকে পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে কেন রোজা রাখা যাবে না রোজা রাখলে কি হয় আশা করছি এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর আপনি পেয়ে গেছেন। আমরা আজকের এই পোস্টে আরো আলোচনা করলাম পিরিয়ডের কত দিন পর রোজা রাখা যাবে? সহজ ভাষায় বলি পিরিয়ড সম্পূর্ণরূপে ভালো না হওয়া পর্যন্ত আপনি রোজা রাখতে পারবেন না এমনকি  যদি আপনার আজকে সকালে অথবা রাতে পিরিয়ড ভালো হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে কিন্তু আপনি রোজা রাখতে পারবেন না।

এইদিনটিকে অবশ্যই পিরিয়ডের দিন হিসেবে গণ্য করা হবে এর জন্য পিরিয়ড সম্পূর্ণরূপে ভালো হয়ে যাওয়ার পর পরের দিন পাক-পবিত্র হয়ে রোজার জন্য নিয়ত করতে পারবেন। আমরা আজকের এই পোস্টে আরো আলোচনা করলাম রমজান মাসের ফজিলত সম্পর্কে। পাঠক আশা করছি আজকের এই পোস্টটি আপনার কাছে ভালো লেগেছে আজকের এই পোস্টে যদি ভালো লেগে থাকে কমেন্ট করে কিন্তু অবশ্যই জানাবেন আর হ্যাঁ আপনি যদি এমন শিক্ষামূলক টিপস আরো পেতে চান এবং রমজান মাস সম্পর্কে আপডেট পেতে চান তাহলে আমাদের এই ওয়েবসাইটে নিয়মিত ভিজিট করবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ডিজিটাল লাইফ স্টাইলের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url