ন্যাচারাল মেকআপ করার নিয়ম জানুন (ন্যাচারাল বিউটি)

ঘরে বসে ন্যাচরাল মেকআপ করতে চাচ্ছেন? মেকআপ আমাদের ফেস এর সৌন্দর্যকে ফুটিয়ে তুলতে সহায়তা করে। তাই আপনাদের সুবিধার্থে আজকের এই পোস্টে আমরা আপনাদের সাথে এমন কিছু টিপস শেয়ার করব যার মাধ্যমে আপনারা সহজেই ঘরে বসেই গ্লোয়িং ন্যাচারাল মেকআপ লুক ক্রিয়েট করতে পারবেন।ন্যাচারাল মেকআপ করার নিয়ম,ঘরে বসে মেকআপ করার নিয়ম এবং হালকা মেকআপ সম্পর্কে জানতে নিচে দেখুন।
ন্যাচারাল মেকআপ করার নিয়ম ঘরে বসে মেকআপ করার নিয়ম
আমি নিশ্চিত আপনি যদি আজকের এই পোস্টটি সম্পন্ন দেখেন তাহলে আপনি খুব সহজেই যেকোনো পার্টি অথবা অকেশনে যাওয়ার আগে ঘরে বসে ন্যাচারাল লুক ক্রিয়েট করতে পারবেন। আজকের এই পোস্টে আমরা ঘরে বসে মেকআপ করার নিয়ম এবং ন্যাচারাল মেকআপ করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।

পেজ সূচিপত্র

       ভূমিকা        
বর্তমান সময়ে মেকআপ পছন্দ করে না এমন মেয়ে মানুষ খুঁজে পাওয়া খুবই মুশকিল। শুধু মেয়েরাই নয় আজকাল ছেলেরাও মেকআপ করছে। মেকআপের সাহায্যে খুব সহজেই ফেস এর সৌন্দর্যতাকে ফুটিয়ে তোলা সম্ভব। আর মেকআপ যদি হয় লং লাস্টিং এবং গ্লোয়িং তাহলে তো কোন কথাই নেই। গ্লোয়িং ও ন্যাচারাল মেকআপ প্রত্যেকটি আকৃষ্ট করে। কিন্তু অনেকেই ঠিকভাবে মেকাপ করতে পারে না যার ফলে মেকআপ গুলো অনেককে কেকি হয়ে ওঠে এবং ভেসে থাকে।

যা দেখতে খুবই বিশ্রী লাগে এবং বোঝা যায় যে আমরা মেকআপ করেছি। তাই আপনাদের সাথে আজকের এই পোস্টে আমরা ঘরে বসে মেকআপ করার নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করব। গ্লোয়িং ও ন্যাচারাল মেকআপ করার নিয়ম জানতে পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন।

সবার আগে আমাদের জানতে হবে মেকাপ করতে কি কি লাগে। সঠিক পণ্য ছাড়া মেকআপ কিন্তু পারফেক্ট হবে না। তাই মেকাপ করতে কি কি লাগে জানতে নিচে দেখুন

মেকাপ করতে কি কি লাগে

সঠিক ও পরিপূর্ণ পণ্য ছাড়া মেকআপ পারফেক্ট হয় না অনেকেই হালকা পাতলা ফাউন্ডেশন ও পাউডারের মাধ্যমে মেকআপ সম্পন্ন করতে চান কিন্তু এভাবে মেকআপ করলে মেকআপ বসে না যার ফলে মেকআপ গুলো ভেসে থাকে যা দেখতে খুবই বিশ্রী লাগে। তাই ন্যাচারাল ও গ্লোয়িং লুক ক্রিয়েট করতে চাইলে সবার প্রথমে আপনাকে জানতে হবে মেকআপ করতে কি কি লাগে

মেকআপ করার জিনিসের নাম কি

  • মেকআপ পুফ অথবা বিউটি ব্লেন্ডার
  • ব্রাশ সেট
  • ফেস সিরাম অথবা সিট মাস্ক
  • প্রাইমার
  • মশ্চারাইজার
  • সুথিং জেল
  • টোনার 
  • কনসিলার
  • ফাউন্ডেশন
  • ফেক আই লেশ 
  • কাজল
  • মাসকারা
  • ব্লাস 
  • আইলানার
  • হাইলাইটার
  • আইব্রো কিট
  • কম্প্যাক্ট পাউডার
  • লিপ লাইনার
  • লিপস্টিক
  • লিপ গ্লস 
  • সেটিং স্প্রে
  • লং লাস্টিং স্প্রে
ন্যাচারাল গ্লোয়িং ও পারফেক্ট লুক পেতে চাইলে উপরোক্ত পণ্যগুলো প্রয়োজন। আশা করছি আপনি বুঝতে পেরেছেন যে মেকাপ করতে কি কি লাগে এবার চলুন আমরা জেনে আসি ঘরে বসে মেকআপ করার নিয়ম সম্পর্কে।

ঘরে বসে মেকআপ করার নিয়ম

ঘরে বসে পার্লারের মত ন্যাচারাল ও পার্টি মেকআপ করতে চাচ্ছেন? তাহলে পোস্টটি সম্পন্ন পড়ুন। আজকের এই পোস্টে আমরা আপনাদের সুবিধার্থে আপনাদের সাথে এমন কিছু টিপস শেয়ার করব যার মাধ্যমে আপনারা সহজেই ঘরে বসে পার্লারের মত ন্যাচারাল লুক তৈরি করতে পারবেন।
মেকআপের আগে প্রথমে স্কিন কে ভালোভাবে প্রিপেয়ার করে নিতে হবে

স্কিন প্রিপেয়ার করার নিয়ম

মেকাপের আগে স্কিনকে প্রিপেয়ার করা খুবই জরুরী কারণ স্কিনকে ভালোভাবে প্রিপেয়ার না করলে স্কিনে মেকআপ ঠিক ভাবে বসে না যার ফলে মেকআপ পরবর্তী সময় ভেসে থাকে তাই ন্যাচারাল ও গ্লোয়িং লোক পেতে প্রথমে আপনার ফেসকে ভালোভাবে প্রিপেয়ার করে নিবেন। ভালো মানের ফেসওয়াশ অথবা স্ক্রাবারের সাহায্যে প্রথমে ফেসকে ভালোভাবে  পরিষ্কার করতে হবে।এবার ফেস এ একটি শীট মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। ফেসকে হাইড্রেট করার জন্য সিট মাস্ক ব্যবহার করা হয়।

ফেস হাইড্রেট থাকলে মেকআপ করার পর ন্যাচারাল গ্লো আসে। তারপর একটি ভাল মানের টোনার ব্যবহার করতে হবে টোনার ব্যবহার করলে ফেস এর পিএইচ এর মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। তারপর একটি ভাল মানের মশ্চারাইজার ফেসে ম্যাসাজ করতে হবে। একটি সিরাম ব্যবহার করতে হবে। সিরাম ব্যবহার করার ফলে ত্বকে অনেক বেশি গ্লোই গ্লোই ভাব আসে এবং মেকআপ দেখে অনেক ন্যাচারাল মনে হয়। এছাড়াও শুধু মেকাপের সময়ই নয়,

প্রতি রাতে ঘুমানোর আগেও ফেস সিরাম ব্যবহার করা উচিত। সিরাম ব্যবহার করার ফলে ত্বকের কালচে দাগ,চোখের নিচের দাগ ও আলার্জি জাতীয় দাগ দূর হয় এবং ত্বক টানটান ও লাবণ্যময় হয়।সাথেই ত্বকের ন্যাচারাল গ্লো দেখা যায়।প্রত্যেকবার মেকাপের আগে স্কিনকে এভাবে প্রিপেয়ার করে নেওয়ার ফলে মেকআপ অনেক বেশি ন্যাচারাল লাগে এবং ত্বক অনেক বেশি গ্লোয়িং হয়।

প্রায়মার ব্যাবহার
ফেসকে ভালোভাবে প্রিপেয়ার করার পর ফেস এ ভালো মানের একটি প্রাইমার ব্যবহার করতে হবে। প্রাইমার ব্যবহার করার ফলে মেকআপ ভেসে থাকে না। প্রাইমার ব্যবহার না করলে মেকআপ কেকি হয়ে উঠে এবং পাউডারের মতো ভেসে থাকে। তবে প্রাইমার অবশ্যই ভালো মানের কিনতে হবে নিম্নমানের প্রাইমার গুলো আপনার স্কিনকে ভেতর থেকে ড্যামেজ করতে পারে। এই জন্য আপনার স্কিনের সাথে মানানসই একটি প্রাইমার বেছে নিতে হবে।

কনসিলার ব্যাবহার
আপনার স্কিন টোনের সাথে মানানসই একটি কনসিলার বেছে নিতে হবে।কনসিলার সহজেই ত্বকের যে কোন দাগ ছপকে হাইড করতে সহায়তা করে। যেসব জায়গায় কালো কালো ছোপ দাগ রয়েছে সে অংশগুলোতে কনসিলার ব্যাবহার করতে হবে।যেমন চোখের নিচের অংশে, ভালোভাবে কনসিলার দিয়ে বিউটি ব্লেন্ডারের সাহায্যে ব্লেন্ড করতে হবে।

ফাউন্ডেশন দিয়ে মেকআপ
মেকআপ করার সময় কিন্তু ফাউন্ডেশন ছাড়া চলেই না। ফাউন্ডেশন ছাড়া মেকআপ যেন অসম্পূর্ণ। একটি সুন্দর লুক ক্রিয়েট করতে চাইলে ফাউন্ডেশন আবশ্যক।তবে ফাউন্ডেশন এর কালার অবশ্যই আপনার স্কিন টোনের সাথে মানানসই হতে হবে। ফাউন্ডেশনের শেড অতিরিক্ত লাইট অথবা ডার্ক হলে ন্যাচারাল লুক ক্রিয়েট করা সম্ভব হবে না। আপনাদের সুবিধার্থে আজকের এই পোস্টে আমরা ব্যবহারের ফাউন্ডেশন ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করব। 

মেকআপ এর ক্ষেত্রে ফাউন্ডেশনের ব্যবহার সম্পর্কে জানা অনেক জরুরী। কারণ সঠিক পদ্ধতিতে ফাউন্ডেশনে এপ্লাই না করলে মেকআপ অনেক বেশি কেকী হয়ে থাকে এবং ভেসে ভেসে থাকে। তাই সঠিক পদ্ধতিতে ফাউন্ডেশন ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে জানতে নিচে দেখুন

ফাউন্ডেশন ব্যবহারের নিয়ম

ফাউন্ডেশন একটি ব্রাশের সাহায্যে অল্প করে নিয়ে স্কিনে বিউটি ব্লেন্ডারের সাথে ব্লেন্ড করতে হবে। খেয়াল রাখবেন অতিরিক্ত ফাউন্ডেশন ব্যবহার করার ফলে কিন্তু মেকআপ কেকি হয়ে উঠতে পারে এইজন্য অল্প করে ফাউন্ডেশন নিয়ে বেশি সময় ধরে ব্লেন্ড করবেন। অতিরিক্ত ফাউন্ডেশন ব্যবহার করার ফলে ফাউন্ডেশন ঠিকভাবে ব্লেন্ড করা হয় না।আবার পরবর্তী সময়ে ফাউন্ডেশন টি শুকিয়ে স্কিনে কেকি আকার ধারণ করে যা দেখতে খুবই বিশ্রী লাগে।

আর ফাউন্ডেশন ব্যাবহার করার সময় অবশ্যই ব্রাস ব্যাবহার করতে হবে।ব্রাস এর সাহায্যে সহজেই ফাউন্ডেশন বসানো সম্ভব।ব্রাস এর সাহায্যে অল্প করে ফাউন্ডেশন নিয়ে বেশি সময় ধীরে ব্লেন্ড করতে হবে।এতে মেকআপ লুক অনেক সুন্দর হবে। তবে সুন্দর লুক পেতে হলে কিন্তু অবশ্যই আপনাকে ভালো মানের ফাউন্ডেশন ব্যবহার করতে হবে কারণ অনেকেই ভুল ফাউন্ডেশন ব্যবহার করে মেকআপ লুক নষ্ট করে ফেলে তাই ফাউন্ডেশন কোনটা ভালো জানতে নিচে দেখুন।

ফাউন্ডেশন কোনটা ভালো

আজকের এই পোস্টে আমরা আপনাদের সাথে ভালো মানের কিছু ফাউন্ডেশন নিয়ে আলোচনা করব ভালো মানের ফাউন্ডেশন গুলোর দাম অবশ্যই একটু বেশি হবে কিন্তু এগুলো পারফেক্ট লুক ক্রিয়েট করতে সহায়তা করবে। নিম্নমানের ফাউন্ডেশন গুলো ইউজ করার ফলে কিছুক্ষণ পর মুখ কালচে দেখায় আবার মেকআপ গুলো ভেসে ভেসে থাকে তাই ভালো লুক পেতে চাইলে অবশ্যই ভালো মানের ফাউন্ডেশন কিনতে হবে।

  • Huda beauty foundation
  • Milani conceal perfect 2 in 1 foundation
  • Maybelline Fit Me Foundation
  • Dior Forever Skin Glow Foundation
  • Laura Mercier Weightless Perfecting Foundation 
  • L'Oreal Paris Infallible Long wear Foundation 
  • IT cosmetics CC

উপরোক্ত এই  ওয়াটারপ্রুফ লং লাস্টিং ফাউন্ডেশন গুলো ব্যবহার করার ফলে পারফেক্ট লুক পাওয়া সম্ভব।

ব্লাস ব্যাবহার
তারপর আপনার পছন্দসই একটি ব্লাশ ব্যবহার করবেন। ন্যাচারাল লুক ক্রিয়েট করার জন্য অবশ্যই হালকা আলতো ভাবে ব্লাশ ব্যবহার করতে হবে। ড্রাই স্কিনের ক্ষেত্রে লিকুইড ব্লাশ ব্যবহার করতে হবে।

কম্প্যাক্ট পাউডার
আলতো ভাবে ব্লাশ ব্যবহার করার পর একটি কম্প্যাক্ট পাউডারের সাহায্যে স্কিন ভালোভাবে সেট করে নিন। অনেকেই আছে কম্প্যাক্ট পাউডারকে ব্লেন্ডারের সাহায্যে স্কিনে ঘষাঘষি করে। কম্প্যাক্ট পাউডার কখনোই স্কিনে ঘষাঘষি করা যাবে না অবশ্যই আলতো ভাবে ড্যাপ ড্যাপ করে সেট করতে হবে। এতে অনেকাংশে ন্যাচারাল লুক পাওয়া সম্ভব।

সেটিং স্প্রে ব্যবহার
কম্প্যাক্ট পাউডার সেট করা হয়ে গেলে তারপর একটি সেটিং স্প্রে সাহায্যে পুরো ফেসে মেকআপ ভালোভাবে বসিয়ে নিবেন। সেটিং স্প্রে ব্যবহার করার ফলে মেকআপ টি দেখে সম্পূর্ণ ন্যাচারাল মনে হয় অর্থাৎ মেকআপ গুলো ভেসে থাকে না। মেকআপ করার সময় সেটিং স্প্রে ব্যবহার আবশ্যক।

হাইলাইটার ব্যাবহার
ত্বকে হাইলাইটার ব্যবহার করার মাধ্যমে ত্বককে ফুটিয়ে তোলা সম্ভব। তাই গালে এবং যে অংশ আপনি হাইলাইট করতে চান তারওপর হালকা করে হাইলাইট ব্যবহার করবেন। এতে আপনার ত্বক অনেক বেশি গ্লোয়িং হবে।

মাসকারা ও আইলানার
তারপর ভালো ব্র্যান্ডের মাস্কারা ও আইলনার ব্যবহার করতে হবে এক্ষেত্রে আপনি যদি ঠিকভাবে আয়লানার ব্যবহার করতে না পারেন। তাহলে শুধু মাস্কারা ব্যবহার করলেই চলবে।এবার চলুন লিপস্টিক ব্যাবহারের সঠিক নিয়ম জেনে আসি

লিপস্টিক ব্যাবহারের সঠিক নিয়ম

লিপ লাইনার ব্যাবহার
লিপস্টিক দেওয়ার আগে অবশ্যই লিপ লাইনারের সাহায্যে ঠোঁটের সেপ ক্রিয়েট করতে হবে। অনেকেই শুধু লিপস্টিক ব্যবহার করে যার ফলে আশেপাশের এরিয়া গুলোতে লিপস্টিক লেগে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এই জন্যই লিপস্টিক ব্যবহার করার আগে অবশ্যই একটি লিপ লাইনারের সাহায্যে প্রথমে ঠোঁটের সেপ তৈরি করবেন।

লিপস্টিক ও লিপগ্লোস ব্যাবহার
লিপ লাইনের সাহায্যে ঠোঁটে সেফ ক্রিয়েট করার পর ঠোঁটে আলতোভাবে পছন্দসই রঙের লিপস্টিক ব্যবহার করবেন। তারপর একটি গর্জিয়াস ও পারফেক্ট লুক পেতে অবশ্যই লিপস্টিক ব্যবহার করার পর ঠোঁটে লিপগ্লস লাগাতে হবে লিপ গ্লস লাগালে অনেক বেশি আকর্ষণীয় লাগে।

লং লাস্টিং স্প্রে
পুরো মেকাপ লুক ক্রিয়েট হয়ে যাওয়ার পর একটি লং লাস্টিং স্প্রের সাহায্যে পুরো ফেসে স্প্রে করতে হবে। এতে আপনার মেকআপ লুকটি সারাদিন লং লাস্টিং হবে।

আশা করছি আপনি বুঝতে পেরেছেন যে ঘরে বসে মেকআপ করার নিয়ম কি এভাবে আপনি বাসায় বসেই পার্লারের মত পার্টি মেকআপ ও গরজিয়াস মেকআপ তৈরি করতে পারবেন। তবে মেকআপ লুক নির্ভর করছে আপনার পণ্যগুলোর গুণগত মানের ওপর। ভালো মানের পণ্য ব্যবহার করলে অবশ্যই মেকআপ লুক সুন্দর হবে। এবার চলুন আমরা জেনে আসি ন্যাচারাল মেকআপ করার নিয়ম

ন্যাচারাল মেকআপ করার নিয়ম

ঘরে বসে ন্যাচেরাল লুক ক্রিয়েট করতে চাচ্ছেন? প্রত্যেকের পছন্দ আলাদা আলাদা অনেকেই খুব হেভি মেকআপ পছন্দ করে আবার অনেকেই হালকা মেকাপের মধ্যে ন্যাচারাল লুক ক্রিয়েট করতে চাই।তাই তাদের উদ্দেশ্যে আমাদের আজকের এই পোস্টটি। যারা ঘরে বসে ন্যাচারাল মেকআপ করতে চাচ্ছেন তারা পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন।
ন্যাচারাল মেকআপ করার আগে অবশ্যই আপনার স্কিনকে ভালোভাবে প্রিপেয়ার করতে হবে।

স্কিন প্রিপেয়ার
স্কিনকে প্রিপেয়ার করার জন্য প্রথমে ভালো মানের একটি ফেসওয়াশ অথবা স্ক্রাবারের সাহায্যে ফেসকে পরিষ্কার করতে হবে।

মশ্চারাইজার
একটি ন্যাচারাল লুক পেতে হলে অবশ্যই আপনার স্কিনে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে।ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করার ফলে ফেস অনেক বেশি হাইড্রেট থাকে যার ফলে স্কিনে মেকআপ টি ভালোভাবে বসে এবং একটি ন্যাচারাল লুক দেয়।

টোনার
যে কোন ফেসে টোনার ব্যবহার করা আবশ্যক। টোনার ব্যবহার করার ফলে ত্বকের পিএইচ এর মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। এইজন্য শুধু মেকআপ করার আগেই নয় প্রতি রাতে ঘুমানোর আগে অবশ্যই ফেসের টোনার ব্যবহার করে ঘুমাতে হবে।

সিরাম
মেকআপ করার আগে অবশ্যই ভালো মানের সিরাম ব্যবহার করতে হবে। সিরাম ব্যবহার করার ফলে ত্বক অনেক বেশি গ্লো করে এবং মেকআপ দেখে অনেক ন্যাচারাল মনে হয়।

প্রাইমার
তারপর কনসিলার দেওয়ার আগে তাকে প্রাইমার এপ্লাই করতে হবে। প্রাইমার দেওয়ার ফলে মেকআপ কেকি হয় না দেখে অনেক ন্যাচারাল মনে হয়।

কনসিলার
ত্বকের যেকোনো কালচে দাগ ছোপ দূর করতে কনসিলার সহায়তা করে। তাই আপনার ত্বকের যে অংশগুলোতে কালো কালো দাগ রয়েছে সেখানে কনসিলার ব্যবহার করবেন এতে দাগ ছোপ হাইড হবে। যেমন চোখের নিচের অংশে কনসিলার ব্যবহার করতে হবে। তারপর ন্যাচারাল লুক ক্রিয়েট করতে ফাউন্ডেশনের বদলে কনসিলার হালকা করে নিয়ে ত্বকে এপ্লাই করবেন। সেটি বেশি সময় ধরে ব্লেন্ড করতে থাকবেন যেন আপনার ত্বকে কনসিলারটি সম্পূর্ণ বসে যায়।

লিকুইড ব্লাশ
তারপর ন্যাচারাল লুক পেতে একটি লিকুইড ব্লাশ ব্যবহার করতে হবে। তবে হ্যাঁ, লিকুইড ব্রাশ কিন্তু অল্প পরিমাণে ব্যবহার করতে হবে, যেন দেখে সম্পূর্ণ ন্যাচারাল মনে হয়।

কম্প্যাক্ট পাউডার
তারপর একটি কম্প্যাক্ট পাউডারের সাহায্যে ফেস সেট করতে হবে। আর হ্যাঁ কম্প্যাক্ট পাউডার কখনোই ত্বকে ব্লেন্ডারের সাহায্যে ঘষাঘষি করবেন না এতে মেকাপ নষ্ট হতে পারে কম্প্যাক্ট পাউডার হালকা করে নিয়ে ব্লেন্ডারের সাহায্যে ড্যাপ ড্যাপ করে সেট করবেন।

লিকুইড হাইলাইটার
তারপর একটি লিকুইড হাইলাইট এর সাহায্যে ত্বককে হাইলাইট করুন। এটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ধাপ অনেকেই ত্বককে অতিরিক্ত গ্লোয়িং করার জন্য প্রচুর হাইলাইটার ব্যবহার করে। যা দেখতে খুবই বিশ্রী লাগে এই জন্য চেষ্টা করুন পরিমাণ মতো লিকুইড হাইলাইটার ব্যবহার করার এতে সম্পন্ন ন্যাচারাল লুক পাওয়া সম্ভব।

সেটিং স্প্র
তারপর একটি সেটিং স্প্রে পুরো ফেসে ভালোভাবে স্প্রে করুন এতে মেকাপটি যেন ভালোভাবে বসে যায়। তারপর একটি লং লাস্টিং স্প্রের সাহায্যে মেকআপ কে সারাদিন লং লাস্টিং করুন।
এই মেকআপ লুকটি আপনি যেকোন অকেশনে ব্যবহার করতে পারবেন ন্যাচারাল লুক আমাদের প্রত্যেককেই আকৃষ্ট করে।আশা করছি ন্যাচারাল মেকআপ করার নিয়ম সম্প্রকে আপনি বুঝতে পেরেছেন। এবার চলুন আমরা চোখের মেকআপ করার পদ্ধতি সম্পর্কে জেনে আসি

চোখের মেকআপ করার পদ্ধতি

যেকোনো অকেশনে যাওয়ার আগে অবশ্যই মানানসই চোখের মেকআপ করতে হয়। কিন্তু অনেকেই ঠিকভাবে চোখের মেকাপ করতে পারে না তাই আজকের এই পোস্টে আমরা এমন কিছু সহজ পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করব যার মাধ্যমে আপনি সহজেই ঘরে বসে চোখের পারফেক্ট মেকআপ লুক তৈরি করতে পারবেন।

অকেশন অনুযায়ী চোখের মেকআপ সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। কোন পার্টি অথবা বার্থডে পার্টিতে যাওয়ার জন্য গ্লসি অথবা সীমার আই লুক ক্রিয়েট করতে হবে। আর কোন অনুষ্ঠান অথবা সাধারণ অকেশনে যাওয়ার জন্য যাওয়ার জন্য ন্যাচারাল আইলুক ক্রিয়েট করতে হবে। প্রথমে চলুন আমরা জেনে আসি গ্লসি অথবা সীমার আই লুক কিভাবে ক্রিয়েট করতে হয়

সীমার আই লুক 

সিমার আই লুক ক্রিয়েট করার জন্য প্রথমে চোখের উপরের অংশে প্রাইমার ব্যবহার করতে হবে। তারপর একটি ব্রাশের সাহায্যে পছন্দের কালার চোখে ব্লেন্ড করতে হবে। খেয়াল রাখবেন মেকআপ যেন এদিক-ওদিক লেগে না যায় আস্তে আস্তে সঠিকভাবে করতে হবে। তারপর মানানসই কালারের গ্লিটার ব্যবহার করতে হবে। চোখের পুরো অংশ জুড়ে গ্লিটার ব্যবহার করা যাবে না। এক সাইড থেকে গ্লিটার ব্যবহার করতে হবে এতে দেখতে অনেক বেশি আকর্ষণীয় লাগবে। ব্যাস হয়ে গেল সীমার আই লুক। যে কোন ধরনের পার্টি অথবা বিয়ের অনুষ্ঠানে সীমার আই লুক এভাবে ক্রিয়েট করতে পারবেন।

ন্যাচারাল আই লুক

ন্যাচরাল আই লুক আমাদের প্রত্যেকটি আকৃষ্ট করে আইলো ক্রিয়েট করার জন্য প্রথমে চোখে ভালোভাবে প্রাইমার এপ্লাই করতে হবেম তারপর খুব সামান্য পরিমাণে আইসা ড্র চোখের উপরের অংশে ব্লেন্ড করতে হবে যেন দেখতে খুবই ন্যাচারাল লাগে। তার ওপর গ্লিটার আইলানার অথবা নরমাল আইলনার ব্যবহার করবেন এতে আপনার চোখ অনেক বেশি আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।

আশা করছি ওপরের এত আলোচনার মাধ্যমে চোখের মেকআপ করার পদ্ধতি সম্পর্কে আপনি বুঝতে পেরেছেন এই বিষয়ে যদি আপনার আরো কোন মতামত থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের সাথে যোগাযোগ করবেন।

পাঠকদের কিছু প্রশ্ন

চেষ্টা করবো পাঠকদের সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার

মেকআপ করার জিনিসের নাম কি??
মেকআপ করতে বিভিন্ন পণ্যের প্রয়োজন হয়। যেমন মাসকারা, আইলানার, লিপ লাইনার, লিপ গ্লস,ফাউন্ডেশন ,কাউন্সিলার ,প্রাইমার ,মশ্চারাইজার ,কাজল ,ফেক আই লেস, টোনার, ব্লাশ, কম্প্যাক্ট পাউডার।

ঘরে বসে মেকআপ করার নিয়ম কি?
ঘরে বসে পার্লারের মতো পার্টির মেকআপ ও গর্জিয়াস মেকআপ করার নিয়ম জানতে পোস্টটি আবারো করুন।

হালকা মেকআপ কিভাবে করবো
হালকা মেকাপ করতে চাইলে প্রথমে আপনার ফেসকে প্রিপেয়ার করে আলতোভাবে কনসিলার ব্যবহার করার পর হালকা একটু ব্লাশ ও লিপস্টিক ব্যবহার করতে হবে। এতে সম্পূর্ণ ন্যাচারাল লুক পাওয়া সম্ভব।

মেকাপ করতে কি কি লাগে?
মেকআপ করতে বিভিন্ন পণ্য প্রয়োজন। যেমন কনসিলার, প্রাইমার, মশ্চারাইজার, ফাউন্ডেশন, লিপস্টিক ,লিপ লাইনার ,ফেক আই লেস, টোনার, ব্লাশ, কম্প্যাক্ট পাউডার।

ছেলেদের মেকআপ করার পদ্ধতি কি?
ছেলেদের মেকাপ করার জন্য প্রথমে স্কিনকে ভালোভাবে প্রিপেয়ার করে নিতে হবে তারপর হালকা একটু কনসিলার ও কম্প্যাক্ট পাউডার ব্যবহার করলেই চলবে।

চোখের মেকআপ করার পদ্ধতি কি?
চোখের মেকআপ করার বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে। সে পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে ওপরে দেখুন।

লেখকের শেষ কথা

প্রিয় পাঠক আমরা আজকের এই পোস্টে মেকআপ করতে কি কি লাগে, ন্যাচারাল মেকআপ করার নিয়ম ,পার্টি মেকআপ করার নিয়ম এবং ঘরে বসে মেকআপ করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করলাম। অনেকেই আছে যারা ঘরে বসে পার্লারের মতো মেকআপ লুক ক্রিয়েট করতে পারে না। তাই তাদের সুবিধার্থে আমাদের আজকের এই পোস্টটি আজকের এই পোস্টে আমরা ফাউন্ডেশন কিভাবে ব্যবহার করতে হয়?, কনসিলার কিভাবে ব্যবহার করতে হয়? 

এবং লিপস্টিক ব্যবহার করার সঠিক পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। সাথেই কিভাবে একটি ন্যাচারাল লুক ক্রিয়েট করা যায় সে বিষয়েও আলোচনা করেছি। আশা করছি আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে আপনি উপকৃত হয়েছেন। আজকের এই পোস্টে যদি আপনার কাছে ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই একটি কমেন্ট করে জানাবেন আর হ্যাঁ আপনি যদি এমন পোস্ট আরও পেতে চান তাহলে এই ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করবেন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ডিজিটাল লাইফ স্টাইলের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url