বেল পাতার উপকারিতা কি কি ? ১ সপ্তাহে ব্রণ ও দাগ দুর করুন

 বেল যেমন খেতে সুস্বাদু তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর।শুধু বেলই নয় সাথে বেলের পাতাও হাজারো পুষ্টিগুণ ও ভিটামিন ভরপুর।আপনি যদি বেল পাতার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান তাহলে এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন।আজকের এই পোস্টে বেল পাতার উপকারিতা কি কি এবং বেল পাতার ব্যাবহার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।

বেল খাওয়ার সঠিক নিয়ম

বেল পাতার উপকারিতা কি কি ? ১ সপ্তাহে ব্রণ ও দাগ দুর করুন

বেল পাতা অ্যাসিডিটি ,ডায়বেটিস, বদহজম,উচ্চ রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করে এবং হার্টকে সুস্থ রাখে।আপনি অবাক হবেন বেল পাতার উপকারিতা সম্পর্কে জানলে।বেল পাতা হাজারো গুনাগুন ও ভিটামিন ভরপুর।বেল পাতার মধ্যে ঔষধি গুনাগুন রয়েছে।আপনি যদি বেল  পাতার উপকারিতা ,বেল পাতার ব্যাবহার ও বেল পাতার বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে আজকের এই পোস্টটি সম্পন্ন পড়ুন। 

বেল পাতা (Bel Patra Benefits)

বেল পাতা ভারতে আয়ুর্বেদিক পাতা হিসেবে ব্যাবহার করা হয়।বেল পাতায় রয়েছে অ্যান্টি ফাংগাল ও অ্যান্টি প্যারাসাইট উপাদান যা শরীরের হজম শক্তি বৃদ্ধি করে, পেট পরিষ্কার করে,পেট ব্যাথা,বদ হজম, অ্যাসিডিটি ও গ্যাস দুর করে।পেট সংক্রান্ত সমস্ত সমস্যায় বেল পাতার উপকারিতা অনেক।বেল পাতার বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানলে আপনি অবাক হবেন।আপনি যদি বেক পাতার সমস্ত উপকারিতা ও গুনাগুন সম্পর্কে জানতে চান তাহলে নিচে দেখুন, বেল পাতার উপকারিতা কি কি দেওয়া রয়েছে;

বেল পাতার উপকারিতা কি কি

বেল পাতায় আছে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি ,রিবোফ্লাভিন, পটাশিয়াম ,ক্যালসিয়াম , অ্যান্টি ফাঙ্গাল ও অ্যান্টি প্যারাসাইট, ফাইবার,ভিটামিন বি১,ভিটামিন বি৬ এবং ভিটামিন বি১২  যা শরীরের বিভিন্ন রোগ বালাই দুর করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।বেল পাতা ওষুধের মত কাজ করে আপনি বেলপাতা কে আপনার স্কিনের ব্যবহার করতে পারবেন।

আরো জানুন : মোবাইল থেকে গেম খেলে টাকা আয় করুন নগদে

আপনার স্কিনে যদি ব্রণ , রেশ অথবা অ্যালার্জির জাতীয় সমস্যা থাকে তাহলে বেল পাতা পাটায় বেট স্কিনে ব্যাবহার করতে পারবেন।বেল পাতা হাজারো ঔষধী গুনাগুনে ভরপুর।বেল পাতার আরো উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে নিচে দেখুন;

1. বেল পাতায় রয়েছে ক্যালসিয়াম যা আপনার হারের জন্য অনেক বেশি উপকারী।বয়স যখন ৪০ এর ওপরে হয় তখন শরীরে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। যেমন হাড় ক্ষয়, পায়ের অথবা হাতের জয়েন্টে জয়েন্টে ব্যথা।এমন অবস্থায় আপনি যদি বেলপাতা কে পাটায় পেস্ট বানিয়ে এটি পায়ের উপর লাগিয়ে রাখেন কিংবা বেলপাতা শরবত বানিয়ে খান তাহলে আপনি খুব দ্রুত এই সমস্যা থেকে রেহাই পাবেন।

আরো জানুন : বাবুল গেম খেলে টাকা ইনকাম পেমেন্ট বিকাশে

2. বেল পাতায় রয়েছে অ্যান্টি ফাংগাল উপাদান, যা ত্বকে বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া অথবা ছত্রাক জনিত সমস্যা দূর করে। এছাড়াও দাউদ চুলকানি  জাতীয় সমস্যা দুর করে।আপনার যদি দাউদ, চুলকানি কিংবা ব্রণ জাতীয় সমস্যা থাকে। তাহলে বেলের কুষুরি পাতাগুলোকে পাটায় বেটে পেস্ট করে আক্রান্ত স্থানে ব্যাবহার করবেন এতে খুব দ্রুত সেরে যাবে।

3.বেল পাতায় ও ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আপনার পেটের বিভিন্ন সমস্যা দূর করবে।পেটের হজম শক্তি বৃদ্ধি করবে,আমাশয়, গ্যাস,বমি বমি ভাব,ডায়রিয়া দুর করবে।আপনার পেট সংক্রান্ত কোনো সমস্যা অ্যাথাকে তাহলে আপনি রোজ সকালে এক গ্লাস বেলের সরবত খেয়ে নিবেন এতে খুব দ্রুত সমস্যা থেকে রেহাই পাবেন।

4. বেল পাতা ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।বেল পাতায় বিভিন্ন ওষধি গুনাগুন রয়েছে তার মধ্যে একটি হলো ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণ করে।আপনি যদি আপনার শরীরের ডায়বেটিস নি়ন্ত্রণ করতে চান তাহলে নিয়মিত সকালে এক গ্লাস বেল পাতার রস বানিয়ে খাবেন।

5. বেল পাতায় রয়েছে প্রচুর পিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট যা হৃদযন্ত্র ভালো ও সুস্থ রাখে।ডেইলি এক গ্লাস বেল পাতার সরবত আপনার হার্ট এ্যাটাকের ও উচ্চ রক্ত চাপ ঝুঁকি কমায়।বেল পাতা হার্টকে সুস্থ রাখার পাশাপাশি আপনার হজম শক্তি কে ভালো রখে।

6. বেল পাতায় বিদ্যমান ফাইবার বা আঁশ আপনার হজম শক্তিকে আরো উন্নত করে তলে।আপনি নিশ্চই জানেন বেল পাতার রস খেলে পেট ঠান্ডা থাকে।তবে পেট ঠান্ডা থাকার পাশাপাশি আপনার হজম শক্তি কেউ ভালো করে।বেল পাতা পেট সক্রান্ত প্রত্যেকটি সমস্যা দূর করে।

7. বেল পাতা গ্যাস দুর করে।শুনে নিশ্চয়ই অবাক হচ্ছেন তাই না? বেল পাতার গুনাগুন এক দুই লাইনে বলা সম্ভব নয়।বেল পাতা হাজারো গুনাগুন ভরপুর।আপনার যদি গ্যাস এর সমস্যা থাকে তাহলে সকালে উঠে বেল পাতার রস খেয়ে নিবেন এতে খুব দ্রুত গ্যাস থেকে মুক্তি পাবেন।

8.বেল পাতায় আছে ভিটামিন এ যা আপনার চোখের জ্যোতি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।এখন ছোট ছোট বাচ্চাদের চোখেই চশমা দেখা যায়।সারাদিন ফোন ও ল্যাপটপ ব্যাবহার করে অল্প বয়সে চোখে সমস্যা তৈরি করে ফেলেছেন?এ চোখের জ্যোতি বৃদ্ধির জন্য উপায় খুজছেন?

চোখের জ্যোতি বৃদ্ধি করতে চাইলে প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস বেল পাতার রস খাবেন এতে আপনার চোখের জ্যোতি দ্রুত বৃদ্ধি পাবে।চোখ অনেক সেনসিটিভ একবার সমস্যা হলে সেরে উঠতে সময়ের প্রয়োজন হয়।

9.শরীরে ইমিউনিটি অভাব? ২ -১ দিন পর পর অসুস্থ হয়ে পড়ছেন?তাহলে রোজ সকালে ২-৩ টি বেল পাতা কাচা চিবিয়ে খান।বেল পাতা শরীরে খুব দ্রুত ইমিউনিটি তৈরি করতে সক্ষম।খালি পেটে বেল খাওয়ার উপকারিতা অনেক। বেল পাতায় রয়েছে হাজারও গুনাগুন।বেল পাতা পেট সংক্রান্ত সমস্ত সমস্যা দুর করে এবং হার্টকে সুস্থ রাখে।

10.বেল পাতা শরীরের জন্য উপকারী হওয়ার পাশাপাশি আপনার স্কিনের জন্যও অনেক উপকারী।বেল পাতায় আছে   প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি যা আপনার ত্বকের ব্রণ ও ব্রণ জাতীয় কালচে দাগ ,রোদে পোড়া দাগ দূর করে। ত্বকের যাবতীয় সমস্যার জন্য বেলপাতা উপকারী।আপনার ত্বকে সমস্যা থাকলে সপ্তাহে ৩-৪ দিন বেল পাতার ফেসপ্যাক বানিয়ে ত্বকে বেবহার করবেন।এখন প্রশ্ন হচ্ছে বেল পাতার ফেসপ্যাক কিভাবে বানাবেন?

বেল পাতার ফেসপ্যাক কিভাবে বানাবো?

বেল পাতার ফেসপ্যাক অনেক উপকারী।বেল পাতার ফেসপ্যাক ব্যাবহার করলে রোদে পড়া দাগ,ব্রণ জাতীয় দাগ,মেছতা, রেশ ও বয়সের ছাপ দুর করে এবং স্কিন কে টানটান ও সুন্দর করে।এবার চলুন জেনে আসি বেল পাতার ফেসপ্যাক কিভাবে বানাবো;
বেল পাতার ফেসপ্যাক বানানোর জন্য যা যা লাগবে;
  • ২-৩ চা চামচ মধু
  • ১ চা চামচ লেবুর রস
  • ৫-৬ টা পরিষ্কার বেল পাতা
  • ১ চা চামচ হলুদ
৫-৬ টি বেল পাতা ভালো ভাবে পরিষ্কার করে নিন তারপর  সেগুলো পাটায় বেটে ভালো ভাবে পেস্ট করে নিন।সেই পেস্ট এর মধ্যে ১ চা চামচ লেবুর রস,১ চা চামচ হলুদ এবং ২-৩ চা চামচ মধু দিয়ে ভালো ভাবে মিশিয়ে নিন।তারপর সেটি আক্রান্ত স্থানে ১৫-২০ মিনিট লাগিয়ে রাখুন।তারপর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
আশা করছি আপনি বুঝতে পেরেছেন বেল পাতার উপকারিতা গুলো কি কি আমরা জেনে নেই বেল পাতা খাওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে। বেল পাতা খাওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে জানতে নিচে দেখুন;

বেল পাতা খাওয়ার সঠিক নিয়ম 

বেল পাতার সমস্ত উপকারিতা পেতে চান তাহলে আপনাকে জানতে হবে বেল পাতা খাওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে। বেলপাতা সঠিক নিয়মে খেলেই আপনি পরিপূর্ণভাবে উপকৃত হবেন।বেল পাতা খাওয়ার কিছু নির্দিষ্ট সময় ও নিয়ম রয়েছে যে নিয়মগুলো অনুসারে খেলে আপনি খুব দ্রুত উপকার পাবেন।তাই বেল পাতা খাওয়ার নিয়ম ও সময় জানতে নিচে দেখুন;

নিয়ম ১: বেল পাতার সঠিক ব্যবহার করতে চাইলে অনেক লাভ আছে।বেল পাতা আপনি যদি কাচা চিবিয়ে খান তাহলে সব চেয়ে বেশি উপকার পাবেন। কারন বেল পাতা যখন সিদ্ধ করা হয় কিংবা রান্না করা হয় তখন অনেক গুনাগুন নষ্ট হয়ে যায়।তাই পরিপূর্ণ গুনাগুন ও উপকার পেতে বেল পাতা কাচা খাওয়ার চেষ্টা করবেন।

নিয়ম ২: বেল পাতা বেশিরভাগ মানুষ সরবত বানিয়ে খায়।প্রতিদিন সকালে বেল পাতার এক গ্লাস শরবত শরীরে ম্যাজিকের মত দারুন কাজ করে।শরীরকে চাঙ্গা রাখে এবং শরীরের এনার্জি বৃদ্ধি করে।নিচে বেল পাতার শরবত রেসিপি দেখে নিন;
শরবত বানানোর জন্য যা যা লাগবে;
শরবত বানানোর জন্য প্রথমে বেল পাতা নিয়ে বেটে তার রস বের করে নিবেন।তার মধ্যে স্বাদ বৃদ্ধির জন্য ২ চা চামচ মধু ও লেবুর রস মিশিয়ে নিতে পারবেন।আপনি চাইলে আইস অ্যাড করতে পারবেন।

নিয়ম ৩: বেল পাতার ভর্তা বানিয়েও খাওয়া যায়।বেশিরভাগ মানুষ ভর্তা বানিয়ে খায় এতেও অনেক উপকার পাওয়া যায়।তবে বেল পাতা সিদ্ধ করার ফলে অনকে পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়। বেল পাতার পরিপূর্ণ উপকার পেতে চাইলে কাঁচা খাওয়ার চেষ্টা করবেন। আপনি বুঝতে পেরেছেন বেল পাতা খাওয়া সঠিক নিয়ম সম্পর্কে এবার আসুন জেনে নেই বেল পাতা খাওয়ার সময় সম্পর্কে

বেল পাতা খাওয়ার সময়

বেল পাতা খাওয়ার সবচেয়ে ভালো সময় হলো সকাল।সকলে খালি পেটে বেল পাতা খেলে সব চেয়ে বেশি উপকার পাওয়া যায়।সকালে উঠে বেল পাতার রস অথবা কাচা খেয়ে নিবেন এতে পেট ভালো থাকবে এবং হজম শক্তি আরো বৃদ্ধি পাবে। এর পাতা হাজারো গুনাগুনে ভরপুর একটি উপাদান আপনি যদি এর পরিপূর্ণভাবে পেতে চান তাহলে অবশ্যই সকালে খালিপেটে খাবেন।

লেখকের শেষ কথা

আজকের এই পোস্টে বেল পাতা খাওয়ার সঠিক সময়, সঠিক নিয়ম এবং বেলপাতার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করলাম আশা করছি আজকের এই পোস্টটি আপনার ভালো লেগেছে ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই একটি কমেন্ট করে জানাবেন আর হ্যাঁ এমন পোস্ট আরো পেতে এই ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করবেন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ডিজিটাল লাইফ স্টাইলের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url