সজনে পাতার হাজারো গুনাগুন জেনে নিন
আমাদের আশেপাশে এমন অনেক গাছ রয়েছে যেগুলো সম্পর্কে আমরা কিছুই জানি না অথচ সেগুলো আমাদের শরীরে ওষুধের মত কাজ করে সেগুলো দিয়ে বিভিন্ন ঔষধোও তৈরি করা হয়। হ্যাঁ বন্ধুরা আজকে আমরা উলট কম্বল গাছের কথাই বলছি ওলট কম্বল এমন একটি গাছ যার হাজারো উপকারিতা রয়েছে।আজকে আমরা আলোচনা করবো উলট কম্বল গাছের উপকারিতা কি কি এবং ওলট কম্বল খাওয়ার নিয়ম।
 |
উলট কম্বল গাছের উপকারিতা কি কি? বিস্তারিত জানুন |
ওলট কম্বল গাছের উপকারিতা সম্পর্কে জানলে আপনি অবাক হবেন। ওলট কম্বল গাছের ছাল থেকে শুরু করে পাতার ডাল শিকড় ফল পর্যন্ত প্রত্যেকটা জিনিসই পুষ্টিগুণ ঔষধি গুনাগুনের ভরপুর। ওলট কম্বল গাছে এতসব ভিটামিন ও পুষ্টিগুণ রয়েছে যা নিমিষে আপনার শরীরের সমস্ত রোগ বালাইকে দূর করতে পারবে আপনি যদি উলট কম্বল গাছের পুষ্টিগুণ ও ভিটামিন সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে চান তাহলে এই পোস্টটি সম্পন্ন পড়তে থাকুন।
ভূমিকা
উলট কম্বল হাজারো পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি ভেষজ উপাদান। উলট কম্বল গাছের ছাল থেকে শুরু করে পাতা, ফুল এবং ডাল প্রত্যেকটা জিনিসই অনেক বেশি ভিটামিন ও পুষ্টিগুণে ভরপুর।এগুলো প্রত্যেকটি জিনিসই মানবদেহে কোনো না কোনো কাজে আসে। আমাদের আশেপাশে এমন অনেক উলট কম্বল গাছ দেখা যায় কিন্তু আমরা জানি না যে এগুলো এত বেশি উপকারি। আপনি যদি উলট কম্বল গাছের হাজারো উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান তাহলে এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন।
ওলট কম্বল গাছ
আমাদের আশেপাশে পথ চলতে গিয়ে আমরা অনেক সময় এই গাছটি দেখতে পাই এই গাছটির ফুল দেখতে মেরুন রঙের বেশ সুন্দর। আপনি যদি উলট কম্বল গাছ চিনে না থাকেন তাহলে ওলট কম্বল গাছ চেনার উপায় বলি, এই গাছটি 8 থেকে 10 ফুট লম্বা হয়।উলট কম্বল গাছগুলো বেশি মোটা হয় না তবে এই গাছের ছাল থেকে শুরু করে ফল, ফুল এবং পাতা প্রত্যেকটি জিনিসই মানব দেহের জন্য অনেক বেশি উপকারী।
আরো জানুন : বসে না থেকে এই অ্যাপস দিয়ে দৈনিক ৩০০ টাকা ইনকাম করুন
উলট কম্বল গাছ স্ত্রীর সংক্রান্ত বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়।উলট কম্বল গাছের আরো অনেক উপকারিতা রয়েছে আপনি যদি এই গাছের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান তাহলে নিচে দেখুন আমরা উলট কম্বল গাছের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।
উলট কম্বল গাছের উপকারিতা কি কি
উলট কম্বল গাছ একটি ঔষধি গাছ হিসেবে আমাদের সবার মাঝে পরিচিত।এটি চিকিৎসা কাজে ব্যবহৃত হয়।এই গাছের অনেক উপকারিতা রয়েছে।তার মধ্যে অন্যতম কয়েকটি উপকারিতা সম্পর্কে আমরা নিচে তুলে ধরেছি। এছাড়াও উলট কম্বল গাছে কি কি উপাদান রয়েছে সে বিষয় জানতে একবার নিচে দেখে নিন।
উলট কম্বল গাছে কি কি উপাদান রয়েছে
উলট কম্বল গাছে বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদান রয়েছে, যা চিকিৎসা কাজে ব্যবহার করা হয়।উলট কম্বল গাছে প্রধান রাসায়নিক উপাদান গুলো হলো ব্রোমিন, বিটা - সিটোস্টেরল, ফ্রাইডেলিন,লুপেওল, স্টিগমাস্টেরোল , আব্রমাস্টেরোল ,অক্টাকোসেনল। এছাড়াও এতে অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি , অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি ডাইবেটিক, অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল ও কার্ডিও প্রোটেকটিভ উপাদান রয়েছে।
যা শরীরের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করতে সাহায্য করে।উলট কম্বল গাছের সবচেয়ে বড় একটি উপকারিতা হলো এটি স্ত্রীর সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যা দুর করে। এটি গাইনোলজিক্যাল সমস্যায় চিকিৎসার জন্য অন্যতম একটি ভেষজ উপাদান হিসেবে পরিচিত। আপনি যদি উলট কম্বল গাছের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান তাহলে নিজে দেখুন;
1. যাদের অনিয়মিত ঋতুস্রাব হয় অথবা নির্দিষ্ট পরিমাণের চেয়ে অনেক কম হয় তাদের ক্ষেত্রে উলট কম্বল একটি পরীক্ষাতো ওষধ।উলট কম্বল এর ছাল শুকিয়ে সেটি গুঁড়ো করে ব্যাবহার করলে খুব দ্রুত অনিয়মিত ঋতুস্রাব ঠিক হয়ে যায়।
2. উলট কম্বল পাতা ও ডালের রসগুলো গনোরিয়া রোগের জন্য অনেক উপকারী। যাদের গনোরিয়া রোগ রয়েছে তারা নিঃসন্দেহে উলট কম্বলের পাতা ও ডালের রস ব্যবহার করতে পারেন। এতে খুব দ্রুত গনোরিয়া রোগ থেকে রেহাই পাবেন।
3. উলট কম্বল গাছের ডাল প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া দূর করে। আপনার যদি প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া থাকে তাহলে উলট কম্বল এর কচি ডাল ছেচে পানির মধ্যে ৩-৪ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখবেন।তারপর সেই পানি সকালে উঠে খালি পেটে খেয়ে নেবেন এতে খুব দ্রুত আপনার সমস্যা দূর হবে।
4. উলট কম্বল ডায়াবেটিস দূর করতে সাহায্য করে। ইন্ডিয়াতে ডায়াবেটিসের জন্য এই গাছটির ছাল আয়ুর্বেদিক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। উলট কম্বল গাছের শিকড়ের গুড়া রক্তের শর্করা ও উচ্চ চিনির মাত্রা কে কমাতে সাহায্য করে।আপনার যদি ডায়াবেটিসে সমস্যা থাকে তাহলে উলট কম্বল গাছের শিখর গুঁড়ো করে ব্যবহার করবেন এবং এই গাছের পাতাও বেটে সকালে খাওয়ার চেষ্টা করবেন।এতে খুব দ্রুত ডায়াবেটিস থেকে রেহাই পাবেন।
5. জরায়ু সংক্রান্ত বিভিন্ন রোগের জন্য উলট কম্বল গাছের গুরুত্ব অপরিসীম। আপনার যদি জরায়ু সংক্রান্ত কোন ধরনের রোগ থাকে তাহলে আপনি উলট কম্বল গাছের ছাল ব্যবহার করতে পারবেন কিংবা উলট কম্বল ডালের রসগুলো ব্যবহার করতে পারবেন।আপনি অবাক হবেন উলট কম্বল পাতার উপকারিতা জানলে। জরায়ু সংক্রান্ত বিভিন্ন রোগে উলট কম্বল গাছের পাতা ব্যবহার করা হয়। এত বেশি উপকারিতা তবুও আমরা এই গাছ সম্পর্কে সেভাবে কিছুই জানি না।
6. বাতের ব্যাথা কমাতে উলট কম্বল গাছ উপকারী। উলট কম্বল গাছের শিকড় শরীরের প্রদাহ কমায়।এতে বাতের ব্যাথা দুর হয়। উলট কম্বল মূলত একপ্রকার প্রদাহ বিরোধী গাছ।যারা এথ্রাইটিস রোগে ভুগছেন, গিরায় গিরায় ব্যথা রয়েছে তারা এই উলট কম্বলের গুড়া দৈনিক একবার খাওয়ার চেষ্টা করবেন।উলট কম্বল পাতা পাটায় বেটে থেত করে যেখানে যেখানে ব্যথা সেখানে ৩০-৪৫ মিনিট লাগিয়ে রাখবেন এতে আপনি খুব দ্রুত ভালো
ফলাফল পাবেন।উলট কম্বল পাতার উপকারিতা অনেক। যাদের বাতের ব্যথা রয়েছে তারা একবার হলেও এই টিপসটি ট্রাই করবেন।
7.উলট কম্বল গছে রয়েছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট যার রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সাহায্য করে।এইজন্য উলট কম্বল গাছ শ্বাসকষ্ট নিরাময়ে কার্যকারী উপাদান হিসেবে কাজ করে। আপনার যদি শ্বাসকষ্টর সমস্যা থাকে তাহলে নিয়মিত উলট কম্বল গাছের ডালের রস পান করবেন।
উলট কম্বল শুকনা পুদিনা সুলফাবিজ ,সারকা ইন্দিকা, কাপচিনি ,শিয়াল কাঁটা, আওবেল ,চাইনা রুট ,তজ ,এলাচ ও জতামাংসি সহ আরো অন্যান্য উপাদান নিয়ে ওষধ তৈরি করা হয়।উলট কম্বল গাছ সাধারণত শহর অঞ্চলে দেখা না গেলেও এগুলো গ্রামাঞ্চলে অনেক বেশি দেখা যায়।গ্রাম অঞ্চলের বেশিরভাগ লোকই এই গাছ সম্পর্কে সচেতন তারা জানেন এই গাছটি কিভাবে ব্যবহার করতে হয় তবে শহর অঞ্চলের অনেকেই এই গাছটি সম্পর্কে এখনো কিছুই জানেনা।
আপনি যদি ওলট কম্বল গাছের সমস্ত উপকারিতা পরিপূর্ণ ভাবে পেতে চান তাহলে ওলট কম্বল খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে হবে।ওলট কম্বল খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে নিচে দেখুন;
ওলট কম্বল খাওয়ার নিয়ম
ওলট কম্বল গাছের ছাল থেকে শুরু করে পাতার ডাল ফল ফুল সব কিছুই মানব দেহের জন্য অনেক বেশি উপকারী। এই গাছ দিয়ে অনেক বড় বড় ওষুধ তৈরি করা হয়। ওরকম আলোচনার মাধ্যমে আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন ওলট কম্বল গাছের উপকারিতা কি কি। চলুন আমরা জেনে নেই ওলট কম্বল খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে।
ওলট কম্বল এর পূর্ণ উপকারিতা পেতে আপনাকে খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে হবে।
ওলট কম্বল কিভাবে খেতে হয়?
নিয়ম ১: ওলট কম্বল গাছের শিখর পানি দিয়ে ভালো ভাবে পরিষ্কার করে পাটায় গুঁড়ো করে নিতে হবে তারপর সেটি সকালে উঠে হালকা গরম পানির সাথে মিশিয়ে খেতে হবে তাহলে খুব দ্রুত অনিয়মিত ঋতুস্রাব সমস্যা দূর হবে।
নিয়ম ২: ওলট কম্বল গাছের কচি ডাল ধরালো কিছু দিয়েছে ছেচে দুই থেকে তিন ঘন্টা পানির মধ্যে ভিজিয়ে রাখবেন তারপর সকালে উঠে খেয়ে নিবেন এতে আপনার প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া দূর হবে।
নিয়ম ৩: ওলট কম্বল গাছের কচি ডালের রস এক চা চামচ মধুর সাথে মিশিয়ে সপ্তাহে তিন থেকে চার বার খেলে গনোরিয়া রোগ দূর হবে।
আশা করছি আপনি ওলট কম্বল খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
লেখকের শেষ কথা
আজকের এই পোস্টে আলোচনা করলাম উলট কম্বল গাছের উপকারিতা কি কি এবং ওলট কম্বল খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে। আশা করছি আজকের এই পোস্টটি আপনার ভালো লেগেছে যদি ভালো লেগে থাকলে তাহলে অবশ্যই একটি কমেন্ট করে জানাবেন আর হ্যাঁ এমন পোস্ট আরো পেতে এই ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করবেন ধন্যবাদ।
ডিজিটাল লাইফ স্টাইলের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url